শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২২

নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ | যা জানতেই হবে

ভালো ফলাফল এবং পরবর্তীতে কোনরূপ জটিলতা এড়াতে নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা জরুরি। আজ কোর্সটিকায় আমরা নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা, পরীক্ষা এবং মানবন্টন সম্পর্কে জানবো।

উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে থাকে। নার্সিং একটি মহৎ পেশা। পাশাপাশি পেশাগত দায়িত্ব যথাযথ পালনের মধ্যদিয়ে নার্সিংয়ে ভালো ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এর সার্কুলার এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে ভালো ফলাফল এবং পরবর্তীতে কোনরূপ জটিলতা এড়াতে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা জরুরি। আজ কোর্সটিকায় আমরা নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা, পরীক্ষা এবং মাবন্টন সম্পর্কে জানবো।

পাশাপাশি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি পরীক্ষায় কীভাবে প্রার্থী নির্বাচন করা হয় এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলেচনা করবো। তাহলে চলো, শুরু করা যাক।

নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা ২০২২

১. আবেদনকারীকে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে এবং বয়স অনূর্ধ্ব ২২ বছর।

২. এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ২০১৯ অথবা ২০২০ ইংরেজি সালে উত্তীর্ণ এবং এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ২০১৭ অথবা ২০১৮ ইংরেজি সালে উত্তীর্ণ হতে হবে।

৩. ৪ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং (বিএসসি ইন নার্সিং) এর ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় সর্বমোট নূন্যতম জিপিএ ৭.০০ থাকতে হবে। তবে কোন পরীক্ষায় জিপিএ জিপিএ ৩.০০ এর কম গ্রহণযোগ্য হবে না এবং উভয় পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে নূন্যতম জিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে।

৪. ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি/ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি এর ক্ষেত্রে যে কোন বিভাগ হতে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় সর্বমোট নূন্যতম জিপিএ ৬.০০ থাকতে হবে। তবে কোন একটি পরীক্ষায় নুন্যতম জিপিএ ২.৫০ এর কম গ্রহণযোগ্য হবে না।

৫. বাংলাদেশের নাগরিক যা বিদেশি শিক্ষা “ও লেভেল” বা “এ লেভেল” কার্যক্রমে এসএসসি/এইচএসসি বা এর সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তাদের মার্কশীটসমূহ বাংলাদেশে প্রচলিত জিপিএ তে রূপান্তর করে Equivalent Certificate সংগ্রহ করার পর অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

৬. ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তির জন্য পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট আসনের ১০ শতাংশ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট আসনের ২০ শতাংশ ভর্তিযোগ্য হবে । ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শুধু নারী প্রার্থী আবেদন করতে পারবে।

পরীক্ষা ও নম্বর বণ্টন

(ক) এসএসসি ও এইচএসসি (সমমান) এর জিপিএ এবং প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত ন্বরের ভিত্তিতে প্রার্থী মূল্যায়ণ করা হবে:

  • এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ৪ গুণিতক = ২০ নম্বর (সর্বোচ্চ)
  • এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ৬ গুণিতক = ৩০ নম্বর (সর্বোচ্চ)
  • MCQ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা ১০০ নম্বর (সর্বোচ্চ)
  • সর্বমোট ১০০ নম্বর।

(খ) লিখিত পরীক্ষার পাশ নম্বর ৪০ (চল্লিশ):

  • বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের বিষয় ভিত্তিক নন্বর বিভাজন: বাংলা-২০, ইংরেজি-২০, গণিত-১০, বিজ্ঞান-৩০ (জীববিজ্ঞান, পদার্থ ও রসায়ন) এবং সাধারণ জ্ঞান-২০ অর্থাৎ সর্বমোট-১০০ নম্বরের MCQ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
  • ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি/ ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য বিষয় ভিত্তিক নম্বর বিভাজন: বাংলা-২০, ইংরেজি- ২০, গণিত-১০, সাধারণ বিজ্ঞান-২০ এবং সাধারণ জ্ঞান-২৫ অর্থাৎ সর্বমোট-১০০ নম্বরের MCQ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

(গ) পাশকৃত প্রার্থীদের মধ্য মেধাতালিকা ও পছন্দক্রম ভিত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং অবশিষ্ট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মেধাক্রমের ভিত্তিতে নির্ধারিত আসনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন। অকৃতকার্য কোন প্রার্থী সরকারি ও বেসরকারি কোন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন না।

মেধা তালিকা ও প্রার্থী নির্বাচন

  • বিএসসি ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে সরকার প্রতিষ্ঠানে ১০% ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ২০% পুরুষ এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে কেবলমাত্র নারী প্রার্থীগণকে অন্যন্য শর্তাবলী, মেধাক্রম ও কোটার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।
  • প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য প্রার্থীদের জাতীয় মেধা তালিকা (বিশেষ কোটা যদি থাকে উল্লেখসহ) স্বাস্থ শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, ডিজিএনএম এবং বিএনএমসি এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
  • সরকারি নার্সিং কলেজ/ইনস্টিটিউট এ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং সন্তানের সন্তানদের জন্য মোট আসনের ২% সংরক্ষিত থাকবে। অবশিষ্ট ৯৮% আসনের মধ্যে ৬০% প্রার্থী জাতীয় মেধা এবং ৪০% প্রার্থী জেলা কোটায় নির্বাচন করা হবে।
  • নির্বাচিত প্রার্থীদের অর্জিত মেধাক্রম এবং নার্সিং কলেজ/ইনস্টিটিউট পছন্দের ভিত্তিতে প্রার্থী কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন করা হবে।
  • ডিপ্লোমা কোর্সের ক্ষেত্রে তাদের কোর্স পছন্দক্রমের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোর্স নির্ধারিত হবে ।
  • মুক্তিযোদ্ধা কোটার দাবীদার সন্তানদের সন্তান এর ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক জারিকৃত বিধি-বিধান অনুসরণ করা হবে।
  • পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী/নির্বাচিত কোন প্রার্থীর দেয়া তথ্য (যা ফলাফল নির্ধারণে বিবেচিত হয়) অসম্পূর্ণ বা ভুল প্রমাণিত হলে তার পরীক্ষা/ফলাফল/ ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।
  • কোন প্রার্থী/ আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধা বা অন্য কোন কোটা ভুল করে পূরণ করলে টাকা জমা দেয়ার পূর্বে নতুনভাবে ফরম পূরণ করতে পারবেন।

নার্সিং ভর্তিতে যে তথ্যগুলো জানা দরকার

প্রশ্ন: ভর্তির সময় কি কি কাগজ পত্র সাথে আনতে হবে?

  • SSC ও HSC পরীক্ষার মূল সনদপত্র ও মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট (মার্কশিট)
  • ৪/৬ কপি পাসপোর্ট সাইজের সম্প্রতি তোলা ছবি
  • ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র
  • মূল নাগরিক সনদপত্র
বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রত্যেকটি সনদপত্র ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট (মার্কশিট) এর চার কপি করে সত্যায়িত কপি।

প্রশ্ন: এসব ছাড়াও কি আর কোন কাগজপত্র লাগবে?
উত্তর: হ্যাঁ লাগবে, নাগরিক সনদপত্র, জন্মসনদপত্রের ৪ কপি করে সত্যায়িত কপি। সাথে অবশ্যই অভিভাবকের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি রাখবেন। কারণ কোন কোন প্রতিষ্ঠান চেয়ে বসতে পারে।

প্রশ্ন: ভর্তির হতে কত টাকা লাগতে পারে?
উত্তর: সব প্রতিষ্ঠানের ভর্তি ফি সমান নয়। তবে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার মত লাগবে। কারণ কিছু প্রতিষ্ঠান ভর্তির সময় পুরো কোর্স ফি নিয়ে নেয় আবার কিছু প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময় পরপর কোর্স ফি নেয়।

প্রশ্ন: ভর্তির জন্য কোথায় এবং কীভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে?
উত্তর: যেদিন ভর্তি হতে আসবেন সেদিনই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে কিছু সময় লাগে। তাই আগে থেকে যথেষ্ঠ সময় নিয়ে আসবেন।

প্রশ্ন: স্বাস্থ্য পরীক্ষা কী কী টেস্ট করানো হয়?

  • X-ray Chest P/A view
  • HBs (Ag)
  • Hb%
  • Blood grouping
  • Urine R/M/E

প্রশ্ন: যারা ওয়েটিং লিস্টে আছে তারা কি ভর্তি হতে পারবে?
উত্তর: যদি ভর্তি সম্পন্ন হওয়ার পরও আসন শূন্য থাকে তাহলে পরবর্তীতে ওয়েটিং লিষ্ট রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে।

প্রতিবছর ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষা যেভাবে আয়োজিত হয় এবং এ পরীক্ষা সম্পর্কে যে তথ্যগুলো জানা অতীব জরুরী, তা আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এর ক্ষেত্রেও এগুলো ব্যতিক্রম না। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য লেখা পড়তে কোর্সটিকার মেডিকেল ক্যাটাগরিটি ভিজিট করো। মেডিকেলের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনাকে ধন্যবাদ ভেদরগঞ্জ কোচিং সেন্টার এন্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট পরিবারের পক্ষ থেকে।