শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

রুদ্রের কবিতায় প্রতিবাদী রোমান্টিকতা


রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ বাংলাদেশের কবিতায় একাধিকবার উচ্চারিত একটি নাম।  তারুণ্য যদি জীবনের গতিময়তার প্রতীক হয়, আর কবিতা যদি হয় সেই প্রতীকের শিল্পিত প্রকাশ, তা হলে সেই ভূমিকায় রুদ্র'র পরিচয় রুদ্র নিজে।  রুদ্র কবিতা যারা মনোযোগের সঙ্গে পাঠ করেছেন কিংবা করবেন, তারা এটা লক্ষ্য করবেন, যে-কেন্দ্র থেকে ওর অভিযাত্রা শূরু, বহুপথ ঘুরে, বহু চড়াই-উৎ্রাই পেরিয়ে, জীবনের স্বপ্ন ও সংগ্রাম, প্রেম ও বিরহ, বন্ধন ও বিচ্ছেদ সব কিছুর মধ্যেও কেন্দ্রাতিগ-সংলগ্নতা থেকে সে বিন্দুমাত্রও বিচ্যুত হয়নি।  

পথ চলতে বারবার হোচট খেয়ে, রক্তাক্ত হয়ে, অসুন্দরের প্রলোভনে সমর্পিত হয়েও, সে কখনো আত্মবিক্রিত ক্রীতদাসে পরিণত হয়নি।  রুদ্র'র কবিতার প্রধান প্রবণতা-- প্রতিবাদী রোমান্টিকতা ।  বাংলা কবিতার এক অন্যতম ধারার প্রতিনিধি হিশেবে এর উত্তরাধিকার বহন করতে গিয়ে রুদ্র কখনো কখনো উচ্চকিত রা কণ্ঠের ধারক হওয়া সত্ত্বেও, কবিতার শৈল্লিক অঙ্গীকারকে সে অস্বীকার করেনি।

বাংলা কবিতার বিচারে, এমনকি বাংলাদেশের কবিতার বিচারে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ'র অবস্থান কোথায়, তা বিচার করবে সময়।  কিছু একজন তারুণ্যদীপ্ত কবির সার্বক্ষণিক কাব্যপিপাসার অকৃত্রিমতাকে মোহমযুক্তভাবে বিচার করলেও আমরা যে-কবিকে পাবো, তার একটি সঠিক মূল্যায়ন হওয়া দরকার, এটা জোরের সঙ্গেই বলা যায়।

মাটি, মদ, মাংস, নারী, স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সুন্দরের প্রতি তীব্রভাবে নিবিষ্ট এক শিল্পমগ্ন তারুণ্যের প্রতিনিধি সে।  বাংলাদেশের কবিতার আপাদমাথা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি, প্রেম ও সুন্দরের প্রতি তার আকণ্ঠ অনুরাগ, দ্রোহ ও সংগ্রামের প্রতি তার অভগ্ন বিশ্বাস এবং সর্বোপরি শিল্পের প্রতি বিশ্বস্ত নিবেদন তার কবিতাকে করে তুলেছে সত্তরের অন্যান্য কবি থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। 

মাত্র পয়ত্রিশ বছরের অদীর্ঘ জীবনে রুদ্র ক্লাস্তিহীন 'শিল্পযাত্রায় সে ছিলো অন্যতম সফল নাবিক। অকাল প্রয়াত এই তরুণ কবির গ্রন্থিত, অগ্রদ্থিত ও অপ্রকাশিত রচনার পংক্তি ও স্তবকসমূহের এক দ্যুতিময় প্রতিভাস তার  রচনা সমগ্র।

রুদ্র'র রচনার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। স্বল্লাযু জীবনে সে ছিলো তরুণদের মধ্যে সবচাইতে সক্রিয়।  কিছু  রচনা! অনেকটাই কাচা, অল্পবয়সের উন্মাদনায় রচিত।  তবু কবিকে. বোঝার জন্যে, কবিজীবনকে উপলব্ধির জন্যে এ-সব কবিতা পাঠকের কাছে নিবেদন করবার প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা যায় না।

এক্ষেত্রে তার বহুল জনপ্রিয় কবিতা  "ভালো আছি, ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো" কবিতাটি পড়লে ভালোবাসগায় ভালোবাসায় কিভাবে দ্রোহ প্রকাশিত হয় তা টের পাওয়া যায়.. 
 
 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনাকে ধন্যবাদ ভেদরগঞ্জ কোচিং সেন্টার এন্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট পরিবারের পক্ষ থেকে।